বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে বিরোধ করতে চাই না, ঝগড়া করতে চাই না। দয়া করে তাড়াতাড়ি এই সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচন দিন। আর তার আগে কোনও কলাকৌশল করবেন না। পরিষ্কার করে বলতে চাই- এ দেশের মানুষ আগে সংসদ নির্বাচন চায়। তারপর স্থানীয় নির্বাচন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে যশোর টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে জেলা বিএনপির উদ্যোগে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে বলতে চাই, উপদেষ্টাদের বলতে চাই আপনাদের যদি কোনও খায়েশ থাকে সরকারে থাকতে চান, ক্ষমতায় থাকতে চান, দয়া করে পদত্যাগ করে যে দল করতেছেন দল করুন, নির্বাচন করুন জনগণের সামনে আসুন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি আরও বলেন, ক্ষমতায় থাকাতে চান? তবে ইস্তফা দেন, নির্বাচন করেন। নতুন দল করবেন আমরা খুব খুশি কিন্তু ক্ষমতায় বসে করা যাবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আবার দেখছি কোনও কোনও দল বলতে শুরু করেছে আগে স্থানীয় নির্বাচন। আবার বলছে এখন নির্বাচনের পরিবেশ নাই। কখন পরিবেশ আসবে? যখন বাংলাদেশের মানুষ অস্থির হয়ে যাবে? প্রতিদিন রাস্তা অবরোধ হচ্ছে। ছেলেরা আসে, ভার্সিটি থেকে পাস করে বেরিয়েছে তারা আসে, যে যার দাবি-দাওয়া নিয়ে আসে। কিন্তু আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি যদি নির্বাচনের মাধ্যমে কোনও সরকার আসে তখন তার সমস্যার সমাধানের সুযোগ আসবে।
তিনি বলেন, আমরা পুরোপুরি মুক্ত হতে পারি নাই। আমরা সে দিন মুক্ত হবো যেদিন আমার ভোটটা আমি দিতে পারব, আপনি আপনার প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবেন, সেদিন ইনশাল্লাহ আমরা মুক্ত হব।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আজকে যদি বলতে পারতাম আমরা ভালো আছি তাহলে খুশি হতাম। জিনিষপত্রের দাম এমন বেড়েছে যে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। চাল, ডাল, তেল, লবণ প্রত্যেকটা জিনিষের দাম বেড়ে গেছে। আর সেই সঙ্গে আমাদের যে নিরাপত্তা। আমরা যদি মনে করি সরকার পরিবর্তন হয়েছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গেছে, আমরা নিরাপদ থাকব, সেটা সম্ভব হয়নি। সে জন্য আজকে আমরা এ জনসভায় উপস্থিত হয়েছি।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা ছিল খুব বেশি কিছু না। আমারা একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে পেতে চাই। ভোটের অধিকারটা ফিরে পেতে চাই। কারণ আমরা একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বাস করতে চাই।
সভায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল ইসলাম তৃপ্তি, সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য টিএস আইয়ুব, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।