রাস্তা ও ড্রেনেজ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে (মসিক) অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত দুদকের একটি প্রতিনিধি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, নগরীর আমলাপাড়া ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ কাজ পরিমাপ করে প্রাথমিকভাবে কিছু অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দুদকের এক্সপার্ট টিম আরও কাজ করবে। পরে প্রধান কার্যালয়ে ফাইনাল প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
মসিক সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর উন্নয়ন প্রকল্পে এক হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ‘ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন সড়ক উন্নয়ন ও ড্রেনেজ নেটওয়ার্কসহ নাগরিক সেবা উন্নতকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির কাজ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে এক বছর বাড়িয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় ধরা হয়েছে।
নগরবাসী জানিয়েছে, সিটি করপোরেশন গঠনের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি। এখনও অনেক সড়ক ভাঙাচোরা। সংস্কার করা অনেক সড়ক দ্রুত সময়ে ভেঙে গেছে। ড্রেন নির্মাণের পর অনেক এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সঠিকভাবে তদন্ত হলে রাস্তা ও ড্রেনেজ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য মিলবে।
শহরের বাঘমারা এলাকার বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, ড্রেন নির্মাণে সঠিক পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। আমার বাসার পানি ড্রেনে নামতে পারে না। ফলে ভারী বৃষ্টিপাত হলে ঘরে হাঁটুপানি জমে। সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই অনিয়মের মাধ্যমে কাজ হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের আলমগীর হোসেন বলেন, আমাদের বাড়ির সামনের সড়ক সংস্কার দুর্বলভাবে করা হয়েছে। ইটের খোয়াগুলোও ছিল সাদা। এছাড়া সড়কের মাটি ধরে রাখতে পাশে ইটের ছোট দেয়াল বা ঢালাইয়ের দেয়াল দেওয়া হয়নি। অথচ আশপাশের সড়কগুলোর মাটি ধরে রাখতে ঢালাইয়ের ছোট দেয়াল করা হয়েছে। এগুলোও দুদকের তদন্ত করা প্রয়োজন। এসব কাজে ঠিকাদারের গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করছি।
ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন কালাম বলেন, রাস্তা ও ড্রেনেজ নির্মানের মাধ্যমে নগরবাসী যে সেবা পাওয়ার কথা ছিল তা পায়নি। অনেক সড়ক সংস্কারের এক বছরও টিকেনি। এছাড়া ড্রেনগুলো নির্মাণ করা হয়েছে উঁচু করে। পথচারীদের চলাচলে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি বাসাবাড়ি একটু নিচে পড়ে গেছে। এছাড়া কাজের মান নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এগুলো দুদক সময় নিয়ে খতিয়ে দেখলে আরও অনেক তথ্য মিলবে।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিঞা বলেন, দুদকের অভিযান সম্পর্কে আমরা আগে থেকে অবগত নই। এভাবে অভিযান পরিচালনা করে সিটি করপোরেশনের মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। এরপরও দুদকের চাহিদার প্রেক্ষিতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয়নি। আমাদের কাছে সব ডকুমেন্টস রয়েছে।