মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন নীতি কঠিন করার ফলে অনেক ভারতীয়কে দেশে ফিরতে হচ্ছে। অভিবাসী ইস্যুতে বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্পের স্বাক্ষরের পর থেকে ভারতীয়রা মার্কিন ভিসার জন্য মন্দিরে ভিড় করছেন।
সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে ‘ভিসা হনুমান’ নামে পরিচিত একটি মন্দিরে ঐশ্বরিক সাহায্যের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন অনেকে।

মন্দিরের পুরোহিত বিজয় ভাট টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেছেন, ভিসা আবেদনকারীদের তাদের পাসপোর্টগুলো ‘ভগবান হনুমান’-এর সামনে রেখে স্তব গাইতে বলা হয়েছে। হনুমান হলেন হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রিয় দেবতা, যিনি তার বানরের মতো চেহারা জন্য পরিচিত।
এ বিষয়ে বিজয়ে ভাট বলেন, ‘এটা পুরোটা বিশ্বাসের ব্যাপার। আপনি যদি মনে করেন, তবে তা ঘটবে। সন্দেহ যদি ঢুকে যায়, তাহলে আপনার আশা পূরণ হবে না।’
পুরোহিত বিজয় ভাট দাবি করেন, তিনি এমন অনেককে দেখেছেন— যারা পূজা করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অনেকে ভিসার অনুমোদন পেয়েছেন।
তার দাবি, একাধিকবার প্রত্যাখ্যান করার পরেও পুণ্যার্থীদের আচার অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অনুমোদন পেয়েছে।
ভাট বলেন, অনেক ভক্তই দূরবর্তী বিভিন্ন রাজ্য থেকে এ মন্দিরে এসেছেন এবং তাদের বেশিরভাগই ভিসা অনুমোদন পাওয়ার বিশ্বাস থেকে এসেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন দীর্ঘকাল ধরে অনেক ভারতীয়দের জন্য মর্যাদার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প এ ধরনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কঠোর ভিসা যাচাই-বাছাই পদ্ধতির দাবি জানিয়েছেন।
হায়দরাবাদ থেকে মন্দিরে প্রার্থনা করতে আসা একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলে গার্ডিয়ান। তিনি জানান, এপ্রিলে নিউ জার্সিতে একটি নতুন কাজ শুরু করার কথা তার। তিনি তার এইচ-১ বি ভিসার অনুমোদন পাওয়ায় ধন্যবাদ জানাতে মন্দিরে প্রার্থনা করতে এসেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রকৌশলী টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘আমরা ১১ জন গত বছর আবেদন করেছিলাম, কিন্তু একমাত্র আমিই পেয়েছি।’
আরেক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার চন্দনা (২৬)। তিনি জানান, ট্রাম্প যখন জিতেছিলেন তখন তিনি হতাশ হন। দু’বছর আগে ভিসার জন্য আবেদনের পর থেকে প্রতি মাসে তিনি মন্দিরে আসতেন।’
দিল্লির শ্রী সিদ্ধি পীঠ চামতকারি হনুমান মন্দিরের পুরোহিত নারায়ণ মিশ্র বলেন, ‘মানুষ খুব বিপর্যস্ত অবস্থায় আসে। এটাই তাদের শেষ অবলম্বন এবং আমরা দেখতে পায় তাদের ইচ্ছা পূরণ হয়।’
তিনি জানান, ভক্তরা কাগজে তাদের ইচ্ছা লেখেন, যা দেবতার সামনে রাখা হয় এবং একটি পবিত্র বাক্সে সংরক্ষণের আগে জপ করা হয়।