আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক এবং গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত। এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক এবং গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত হয়ে গেছে। সংবাদ মাধ্যমটি যখন শেখ হাসিনার বিষয়ে লেখে, তখন তার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পটভূটি বাদ দেয়।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর উনি ভারতে চলে গেছেন এমন শব্দ ব্যবহার করতে তারা অধিকতর পছন্দ করে। বাস্তবতা হচ্ছে শেখ হাসিনা অসংখ্য শিশু হত্যা, নজিরবিহীন সহিংসতা, লুণ্ঠন, দুর্নীতি, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং তিন হাজারের বেশি মানুষকে গুম করে ভারতে পালিয়ে গেছেন।
প্রেস সচিব লেখেন, গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংস্থাটি বলছে, শেখ হাসিনা তার দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলে হত্যা এবং গুমের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
কিন্তু বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এই গুরুত্বপূর্ণ অংশের কিছুই উল্লেখ ছিল না। তারা বিপ্লবের পরে গণগ্রেপ্তার নিয়ে কথা বলতে বেশি পছন্দ করে।
কোনো গণগ্রেপ্তার হয়েছে? কতজনকে গত ছয় মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? আমরা জানতাম যে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর পুলিশ বিএনপির সমাবেশকে জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করেছিল। তারপর কমপক্ষে ২৫ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করেছিল।
প্রেস সচিব আরও লিখেন, মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে একটি নিখুঁত প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। গতকাল তারা একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা বলেছে যে, হাসিনা নয়াদিল্লি থেকে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রকৃতপক্ষে, এটি ‘বাংলার কসাইয়ের’ জন্য একটি নিখুঁত প্ল্যাটফর্ম!
তিনি লিখেন, এটি কি কখনো নির্বাসিত বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে একই রকম প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে? হাসিনার স্বৈরশাসনের আমলে তারেক রহমান লন্ডনে কীভাবে সময় কাটাচ্ছিলেন সে সম্পর্কে লিখেছিল? এটি কি তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিল?
মূলত, বিবিসি বাংলা সম্প্রতি এক সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপেক্ষা করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি তুলে ধরে যে, শেখ হাসিনা ভারতের দিকে পালিয়ে গিয়েছিলেন, তবে এই প্রতিবেদনে তার পলায়ন ও পূর্ববর্তী কর্তৃত্বের পেছনে ঘটে যাওয়া অগণিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
এই পোস্টের পর দেওয়া আরেক পোস্টে প্রেস সচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিবিসি বাংলার। তারা শেখ হাসিনার ১৫ বছরের নৃশংস শাসনের বর্ণনা দিতে ‘একনায়কতন্ত্রিক’ শব্দ ব্যবহার করেছে। এটা হাসিনার স্বৈরাচারকে স্বাভাবিক করার একটা নির্লজ্জ প্রচেষ্টা।‘