শনিবার , ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ | ৩রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. আন্তর্জাতিক
  3. এভিয়েশন
  4. কৃষি
  5. খেলাধুলা
  6. ছবি
  7. জনপ্রিয়
  8. জাতীয়
  9. ডেঙ্গু
  10. ধর্ম
  11. নারী ও শিশু
  12. প্রবাস
  13. প্রযুক্তি
  14. ফটো গ্যালারি
  15. বানিজ্য/অর্থনীতি

ফের শৈত্যপ্রবাহ, দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অফিস

প্রতিবেদক
অনলাইন ডেস্ক
জানুয়ারি ২৫, ২০২৫ ২:৪৫ অপরাহ্ণ

Spread the love
  • বিভিন্ন এলাকায় এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা কমতে পারে
  • মঙ্গলবার থেকেই আবার বাড়তে শুরু করবে তাপমাত্রা

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ছবিটি বিমানবন্দর স্টেশন থেকে তোলা। ছবি: মহুবার রহমান

উষ্ণ ডিসেম্বরের পর জানুয়ারি মাসেও শীতের তেমন প্রভাব দেখা যায়নি। তবে আগামীকাল রবিবার থেকে দেশ জুড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন এলাকায় এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা কমতে পারে। তবে এই শৈত্যপ্রবাহ দুই থেকে তিন দিনের বেশি স্থায়ী হবে না। মঙ্গলবার থেকেই আবার বাড়তে শুরু করবে তাপমাত্রা। এমনটাই ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীর বাদলগাছিতে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ শনিবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমবে। তবে শৈত্যপ্রবাহ কবে নাগাদ শুরু হতে পারে এ প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ফোরকাস্টিং কর্মকর্তা এ কে এম নাজমুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কাল রবিবার থেকে দেশের উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর এলাকা দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। এতে অনেক এলাকায় এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে।’

তাপমাত্রা কমার হার কত দিন থাকতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করবে। তবে সকালের দিকে কুয়াশার তীব্রতা থাকবে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কেটে যাবে।’

এদিকে আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহের পর এ মাসে আর শৈত্যপ্রবাহ হবে না। এতে ডিসেম্বর মাসে যেমন তাপমাত্রা বেশি কমেনি তেমনিভাবে জানুয়ারি দেশের শীতলতম মাস হলেও সেই হারে তাপমাত্রা কমবে না। আর এবার কুয়াশার ঘনত্বও এত বেশি ছিল না।

চলতি মাসের আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এই লঘুচাপ থেকে একটি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। এ ছাড়া দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে এক থেকে দুটি মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা) থেকে তীব্র (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ২ থেকে ৩টি মৃদু (১০ থেকে ৮ ডিগ্রি) থেকে মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ঘন কুয়াশার পরিস্থিতি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। মাসের শুরুতে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহের দেখা পাওয়া গেলেও দেশ জুড়ে শীতের তীব্রতা দেখা যায়নি।

পঞ্চগড়ে বৃষ্টির মতো শিশির পড়ছে : মাঘের শুরুতে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায়। শুরু হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। তবে গত দুদিন ধরে তাপমাত্রা বাড়লেও সূর্যের দেখা মেলেনি। দিনব্যাপী কুয়াশায়  ঢাকা ছিল চারদিক। হিমশীতল বাতাসের কারণে এ জেলায় শীতের তীব্রতা বেশি বিরাজ করছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে এসেছে। তাপমাত্রার এই হেরফেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। নানা ধরনের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকাবাসী।

গতকাল সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে জেলা জুড়ে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, শুক্রবারও তাপমাত্রা কমে ১০ আর দিনে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আকাশ মেঘলা, মাঝারি কুয়াশা ও বৃষ্টির মতো শিশির পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শীত আরও বাড়বে।

এদিকে তীব্র শীতের কারণে রিকশা-ভ্যান চালানো, শাকসবজি তোলা, পাথর তোলা ও চা বাগানে কাজ করতে হাত-পা অবশ হয়ে আসে বলে জানান এসব পেশার মানুষজন।

অন্যদিকে শীতের কারণে বেড়েছে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি। প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। অনেকেই আবার হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতে সুরক্ষায় থাকতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

তিস্তাপাড়ে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য মাত্র ৩ ডিগ্রি : বরফের মতো ঠান্ডা শীতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে নীলফামারী জেলার শহর, বন্দর গ্রাম ও নদীবেষ্টিত গ্রামগুলো। ডিমলা উপজেলার তিস্তাপাড়ে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ কাটার পার্থক্য মাত্র তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস!

গতকাল ডিমলা আবহাওয়া অফিস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে পার্থক্য দাঁড়ায় মাত্র ৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ডিমলার তিস্তাপাড়ের চরখড়িবাড়ি চরের বাসিন্দা আকবর আলী (৫৫) জানান, তিস্তাপাড়ের সমগ্র এলাকার মানুষজন কুঁকড়ে গেছে। গরম কাপড়ে শীত সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। বিছানাপত্র কাঁথা বালিশ কম্বল লেপ বরফ হয়ে গেছে। ফলে ঘরে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে তারা শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

জলঢাকার কাঁঠালী গ্রামের বোরো চাষি মোকছেদ আলী (৫৫) বলেন, আজ (গতকাল) ২ বিঘা জমির বোরোর চারা রোপণ করব বলে ঠিক করেছিলাম। যে ঠান্ডা পড়ছে কোনো কামলাই কাজ করতে আগ্রহী হননি। ফলে বোরোর চারা রোপণ করতে পারিনি।

ভ্যানচালক রিফাত মোল্লা দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত কয়েক দিনে যা আয় হয়েছে তাতে ভ্যানের ভাড়াও ওঠেনি। এমন ঠা-ায় ভ্যানে কোনো যাত্রী উঠতে চান না, বাতাস লাগে তাই।

রিকশাচালক রইস উদ্দিন বলেন, শুক্রবার দিন ভাড়া ভালোই পাওয়া যেত। কিন্তু আজ (গতকাল) রাস্তাঘাটে মানুষ কম। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভাড়া মেরেছি মাত্র দুইটা। দুপুরের দিকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হলে ঠান্ডার প্রকোপ আরও বেড়ে যায়।

এদিকে তাপমাত্রা কমে আসায় কনকনে শীতের প্রকোপে জর্জরিত হয়ে পড়েছে উত্তরের হিমালয়ের এই অঞ্চল। গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষগুলো খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। যানবাহন চলেছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।

অন্যদিকে শীতের কারণে বেড়েছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সর্বশেষ - অপরাধ